মিহিরুজ্জামান সাতক্ষীরাঃ
জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্ত্বরে নব নির্মিত বৃক্ষ শোভিত মনোরম দৃষ্টিনন্দন সাতক্ষীরা কালেক্টরেট পার্কের দুয়ার খুলবে আজ। আজ (২৭ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে প্রধান অতিথি হিসেবে কালেক্টরেট পার্কের উদ্বোধন করবেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার জিল্লুর রহমান চৌধুরী। যেখানে ছিল জলাবদ্ধতা, যেখানে ছিল ময়লা-আবর্জনার স্তুপ, সেখানে আজ বাহারি ফুলের বাগান, সবুজে সবুজময়। সেখানে আজ দৃষ্টিকাড়া হৃদয়হরা দৃশ্য। দিনের আলো ফুরিয়ে গেলে যেখানে থাকতো ঘুটঘটে আঁধার, সেখানে আজ রঙিন বাতির আলোর খেলা। আলোকের ওই ঝরনা ধারায় এ যেন এক চোখ ধাঁধানো আয়োজন। এছাড়াও রয়েছে সুশোভিত রং করা কংক্রিটের বেঞ্চ। আছে দোলনা। এই বেঞ্চে বসে কিংবা দোলনায় দোল খেতে খেতে একদিন আগামী দিনের অনাগত শিশুরা হয়তো জানতে পারবে আমাদের গৌরবের ইতিহাস-ঐতিহ্য। পাথুরে শহরে সবুজের সমারোহে বিশুদ্ধ বাতাস মিলবে এই পার্কে।
জেলা গণপূর্ত অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত সাতক্ষীরা কালেক্টরেট পার্কে জেলার দূর দূরান্ত থেকে আগত মানুষের বসার জন্য ১৪টি বেঞ্চ, শিশুদের জন্য দুটি স্লিপার, একটি ফোয়ারা এবং সৌন্দর্য বর্ধনে রঙিন আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া রয়েছে শিশুদের জন্য দোলনা। আকন্দ, জয়ফল, কাজুবাদাম, সর্পগন্ধা, তেজপাতা, রক্তচন্দন, দারুচিনি সহ কয়েক প্রজাতির ফলজ ও ওষধী গাছ লাগানো হয়েছে। আগত মানুষের সুপেয় পানির ব্যবস্থাও থাকছে এই পার্কে।
বেলাল হোসেন নামে একজন বলেন, সাতক্ষীরা কালেক্টরেট খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই চত্ত্বরে ডিসি অফিস, জজ কোর্ট, চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, বিআরটিএ অফিস, জেলা ত্রাণ অফিস, তথ্য অফিস, জেলা হিসাবরক্ষণ অফিসসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অফিস রয়েছে। সে কারণে প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ এখানে আসেন। আগে সেইভাবে বসার স্থান ছিলো না। এই চত্ত্বরটি হকারসহ বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের দখলে ছিলো। জেলা প্রশাসন সেই দখল উচ্ছেদ করে চমৎকার দৃষ্টিনন্দন পার্ক উপহার দিয়েছেন। মানুষের বসার জায়গা করেছেন। শিশুদের খেলার রাইড নির্মাণ করা হয়েছে। সেজন্য জেলা প্রশাসনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি এবং সেই সাথে এটিকে সঠিক ভাবে রক্ষণাবেক্ষণের দাবী করছি।
এনডিসি বাপ্পি দত্ত রণি বলেন, মঙ্গলবার সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্ত্বরে নব নির্মিত দৃষ্টিনন্দন সাতক্ষীরা কালেক্টরেট পার্কটি পার্কের উদ্বোধন করবেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার জিল্লুর রহমান চৌধুরী।
গণপূর্ত বিভাগের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী তানভীর হাসান বলেন, চত্ত্বরটি আগে ভ্রাম্যমাণ দোকানপাটের দখলে ছিল। যত্রতত্র ফেলা হতো ময়লা-আবর্জনা। এই প্রাঙ্গনে আগত মানুষের কোন বিশ্রাম ও বিনোদনের সুযোগ ছিল না। জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে এবং সাতক্ষীরা গণপূর্ত প্রকৌশল দপ্তর কালেক্টরেট চত্ত্বরে সৌন্দর্য বর্ধনে কালেক্টরেট পার্ক নির্মাণ করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির জনসাধারণের ব্যবহারযোগ্য করে তুলতে বিশেষ পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী গণপূর্ত অধিদপ্তর এটি বাস্তবায়ন করেছে। জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আগত মানুষের বসার জন্য সুব্যবস্থা ১৪টি বেঞ্চ, শিশুদের জন্য দুটি স্লিপার, ভোরে ও বিকেলে হাঁটার জন্য পার্কের চারি পাশে পথ, পার্কের মধ্যস্থলে থাকছে একটি মনোরম ফোয়ারা স্থাপন, পার্কটিকে ঘিরে আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে এই পার্কটি নির্মাণ করতে ৬ মাস ধরে কাজ করেছে। এখানে ভোরে ও বিকেলে হাঁটার পথ, শিশুদের খেলার রাইড ও আগতদের জন্য সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। পার্কটির সৌন্দর্য বর্ধনে বেশ কয়েক প্রজাতির ফলজ ও ওষধি গাছ লাগানো হয়েছে।
সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির আহবায়ক মো. আনিসুর রহিম বলেন, চত্ত্বরটি আগে ভ্রাম্যমাণ দোকানপাট, অবৈধ পার্কিং দ্বারা দখলে ছিল। যত্রতত্র ফেলা হতো ময়লা-আবর্জনা। জেলা প্রশাসকের কার্যালয় এবং আদালত প্রাঙ্গনে আগত সেবা প্রার্থীগণ এই পার্কটি ব্যবহারের সুষ্ঠু সুযোগ পেতেন না। তাদের বিশ্রাম, অপেক্ষা ও বিনোদনের জন্য ছিল না কোন সুব্যবস্থা। কিন্তু জেলা এই চত্ত্বরকে সুন্দর করে সাজিয়েছেন। তিনি প্রশাসকের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান। এই উদ্যোগের ফলে কালেক্টরেট চত্ত্বরের মনোরম পরিবেশ তৈরী হয়েছে। সেবাপ্রার্থী মানুষ আরও বেশি পার্কটি ব্যবহার করতে পারবেন। তবে নিচের মাটিতে সবুজ গাছের ব্যবস্থা রাখার দাবী করেন।
(মিহিরুজ্জামান সাতক্ষীরা মোবাঃ০১৭১৪০৩৮২৮৭/০১৮১১৬৫৮৮৯৯)
Leave a Reply